কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) থেকে শতাধিক নেতা পদত্যাগ করেছেন। দলটির সহসভাপতি ড. আবু জাফর সিদ্দিকী ও যুগ্ম মহাসচিব তমিজউদদীন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মে) দলটির যুগ্ম-মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটু জানান, এলডিপি থেকে সম্প্রতি দুই শতাধিক নেতাকর্মী গণপদত্যাগ করেছেন।

জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন কর্নেল অলি

এদিকে এলডিপি ছেড়ে নতুন করে এলডিপি গঠন করা দলটির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, ২০০৬ সালে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের নেতৃত্বে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) আত্মপ্রকাশের পর থেকে নানা সময়ে আমরা দলটির সঙ্গে সক্রিয় হই। দলটির বয়স দীর্ঘ ১৬ বছর।

এই দীর্ঘসময়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যেমন উত্থান-পতন এসেছে, তেমনি পাল্লা দিয়ে ক্রমাগত ‘অবস্থান পরিবর্তন’ করে গেছেন দলের প্রেসিডেন্ট অলি আহমেদ বীর বিক্রম। রাজনৈতিকভাবে নিয়মিত বিরতিতে অবস্থান পাল্টানোর কারণে ইতোমধ্যে দলের প্রতিষ্ঠালগ্নের জ্যেষ্ঠনেতারা তার নেতৃত্ব ত্যাগ করেছেন।

এলডিপি, রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে না

দুর্ভাগ্যক্রমে এই ধারা থেকে এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদ সরে আসেননি, বরং দিনে-দিনে একটি সুপরিচিত রাজনৈতিক দলকে তিনি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছেন।

পদত্যাগকারী এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব তমিজউদদীন জানান, জাতীয়তাবাদী ঘরানার রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি হচ্ছে এই চেতনার সূতিকাগার। কিন্তু মতের অমিলের কারণে বিএনপির নেতৃত্বের প্রতি নিয়মিত বিষোদ্গার অলি আহমদের নিত্যদিনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি দক্ষিণপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে নতুন একটি জোট গঠনের প্রচেষ্টা করছেন, যা স্পষ্টত জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রতি প্রশ্নবিদ্ধ অঙ্গুলিহেলনের নামান্তর।

গণমাধ্যমে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল ও গণতন্ত্রপন্থি মানুষেরা যখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে কার্যকর গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার সংগ্রামে সক্রিয়, তখনও অলি আহমদ তার নেতৃত্বের পুরো ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে এলডিপিকে একটি ‘রহস্যজনক রাজনৈতিক’ দল হিসেবে ব্যবহার করছেন।

বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের শরিক হয়ে গত ১০ বছর ধরে জোটবিরোধী কার্যক্রম করেছেন। অবস্থান নিয়েছেন জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও একটি বিশেষ দলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা দেখা গেছে চরমমাত্রায়। যা এলডিপির রাজনৈতিক আদর্শ ও লক্ষ্যকে দলিত-মত্থিত করে ফেলেছে। রাজনৈতিক অঙ্গণে এলডিপি একটি হাস্যকর প্রতিক্রিয়ায় পরিণত হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে পদত্যাগকারী নেতারা বলেন, দল পরিচালনার ক্ষেত্রে অলি আহমদ চূড়ান্ত অর্থে ‘কর্তৃত্ববাদী ও আত্মঅহঙ্কারে’ নিমগ্ন একজন মানুষ।

এদিকে এ বিষয়ে অলি আহমদের পক্ষে এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন রাজ্জাক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দুষ্কৃতকারীরা দল ছাড়ায় এলডিপি পবিত্র হয়েছে। এলডিপি দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। ড. কর্নেল অলি আহমদ বীর বিক্রম ও ড. রেদোয়ান আহমদ এ দলের মূল আর্কষণ। তাদের নেতৃত্বে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এলডিপি আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী।